এসইও কি? | এসইও কিভাবে শিখবো | পিলপিল কর্নার

এসইও কি? | এসইও কিভাবে শিখবো | পিলপিল কর্নার

এসইও কি?

আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে যেখানে আপনি নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করেন, তাহলে আপনাকে SEO শব্দটির সাথে পরিচিত হতে হবে। কারণ, একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং তাতে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করাই শেষ কথা না। আপনার তৈরি করা কনটেন্টগুলো ভিজিটরদের কাছে পৌঁছাচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করাও অন্যতম প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

SEO এর পূর্ণরূপ Search Engine Optimization (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন)। একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা কনটেন্টগুলো কোন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করা হলে তা যেন ভিজিটরের সামনে চলে আসে, সেই অনুযায়ী ওয়েবসাইট এবং ওয়েবসাইটের কনটেন্টকে অপটিমাইজ করার নামই SEO। কি... বুঝতে একটু কঠিন মনে হচ্ছে?

চলুন, আরেকটু সহজভাবে বোঝা যাক। মনে করুন, আপনি আপনার ওয়েবসাইটে Photo Editing সম্পর্কিত বিভিন্ন টিউটোরিয়াল প্রকাশ করেন। সুতরাং আপনি চাচ্ছেন, কেউ যদি গুগলে Photo Editing Tutorial লিখে সার্চ করে, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো তার সামনে আগে চলে আসবে এবং সেখান থেকে ওই ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবে।

এখানে চিন্তা করুন যে, শুধুমাত্র আপনিই Photo Editing সম্পর্কিত টিউটোরিয়াল প্রকাশ করেন না, আপনার মতো আরো অনেকেই আছে, যারা একই ধরনের টিউটোরিয়াল প্রকাশ করে। অথচ গুগল আপনার ওয়েবসাইটকেই কেন সার্চ রেজাল্টে সবার আগে দেখাবে? এর কারণ হচ্ছে, আপনি আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোকে গুগল সার্চে সবার আগে নিয়ে আসার জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করেছেন। আর এই কৌশলই হচ্ছে Search Engine Optimization বা SEO!

সুতরাং আমরা বুঝতে পারছি, SEO এমন একটি কৌশল বা নিয়ম যার ব্যবহার করে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোকে গুগলসহ যেকোন সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করাতে পারি এবং আমাদের ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর নিয়ে আসতে পারি।

SEO প্রধানত ২ প্রকারের হয়ে থাকে

On Page SEO: যে SEO ওয়েবসাইটের ভিতরে করা হয়ে থাকে, তাকে On Page SEO বলে। যেমন কনটেন্টের সাথে টাইটেল, ট্যাগ, কিওয়ার্ড ইত্যাদি প্রাসঙ্গিক আছে কি না, তা নিশ্চিত করা। 

Off Page SEO: যে SEO ওয়েবসাইটের বাইরে করা হয়ে থাকে, তাকে On Page SEO বলে। যেমন বিভিন্ন ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয় বা ফোরামে ওয়েবসাইটের লিংক শেয়ার করা। অথবা ওয়েবসাইটের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করা ইত্যাদি।

SEO কেন করবো?

প্রথমেই উল্লেখ করেছিলাম, একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা এবং তাতে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করাই শেষ কথা না। তৈরি করা কনটেন্টগুলো ভিজিটরদের কাছে পৌঁছাচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করাও অন্যতম প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সুতরাং আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলো যেন গুগলে সার্চ করে সবার আগে ভিজিটরের কাছে পৌঁছায়, তার জন্য আপনার ওয়েবসাইটকে অপটিমাইজ করা অপরিহার্য।

এটা মনে রাখতে হবে যে, আপনি যদি ওয়েবসাইটকে SEO না করেন, তাহলে আপনার কনটেন্টগুলো সার্চ ইঞ্জিনে তৃতীয় অথবা চতুর্থ পেজে দেখাবে। হয়তো দেখাবেই না। আর খুব সংখ্যক মানুষই আছেন, যারা গুগলে কোন তথ্য সার্চ করে দ্বিতীয় পেজে যান। অর্থাৎ, বেশিরভাগ ভিজিটরই ওই ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ করবে, যেগুলো সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে প্রদর্শিত হয়েছে। আর যেহেতু আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে প্রদর্শিত হচ্ছে না, ফলে আপনি সম্ভাব্য প্রচুর পরিমাণে ভিজিটর হারাবেন।

সুতরাং বর্তমান প্রতিযোগিতার বিশ্বে SEO ছাড়া সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর বা ট্রাফিক পাওয়া প্রায় অসম্ভব। সাধারণত SEO ছাড়া কোনো ওয়েবসাইটকেই সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কই করে না।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে SEO'র সম্ভাবনা ও ভবিষ্যত কেমন?

আমাদের দেশে বর্তমানে বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে অনেকেই বসে আছেন কাজের সন্ধানে কিংবা একটি চাকরির জন্য। তবে তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে SEO জানলে বসে থাকার কোনো কারণ নেই। শুধু SEO-ই নয়, প্রযুক্তিগত যেকোনো সেক্টরে দক্ষতা থাকলে লোকাল মার্কেটে আপনি অনেক কাজ খুঁজে পাবেন। আর অনলাইন মার্কেটপ্লেস তো আছেই।

আর ওয়েব ডেভেলপারদের ক্ষেত্র SEO এর বিস্তর জ্ঞান থাকাটা অতীব জরুরী। কারণ, SEO সম্পর্কে জ্ঞান নেই, এমন ওয়েব ডেভেলপারকে কখনোই একজন পরিপূর্ণ ডেভেলপার বলা যায় না।

প্রতিনিয়ত আমাদের দেশে হাজার হাজার ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। আর তাই SEO এর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশ্ব বাজারে SEO এখন বিলিয়ন ডলার মার্কেটে রূপ নিয়েছে। আর বাংলাদেশেও অদূর ভবিষ্যতে SEO হবে একটা বিশাল কর্মসংস্থানের জায়গা। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এই কাজে নিয়োজিত রয়েছেন লাখ লাখ ফ্রিল্যান্সার এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও অধিকাংশ ফ্রিল্যান্সারই SEO এর কাজ করে থাকেন। অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে SEO'র যে পরিমাণ প্রজেক্ট কিংবা কাজ রয়েছে তা মোট প্রজেক্ট কিংবা কাজের প্রায় অর্ধেক হবে।

সুতরাং বলা যেতে পারে দেশে কিংবা বিশ্ব বাজারে SEO'র সম্ভাবনা অফুরন্ত এবং SEO এক্সপার্টদের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। তাই SEO তে সফলতা অর্জন করতে হলে আপনার প্রয়োজন লেগে থাকার মানুসিকতা এবং কঠোর পরিশ্রম। পরিশ্রম মানেই কঠিন কিছু নয়। যেকোন স্কিল শিখার ক্ষেত্রে মন দিয়ে লেগে থাকলে সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ।

ব্যাকলিংক (Backlink) কী?

আমরা যখন কোন ওয়েবসাইটকে গুগলে র‍্যাঙ্ক করাতে চাই, তখন স্বভাবতই অন্যান্য বিষয়ের সাথে ব্যাকলিংক কথাটি চলে আসে। কি এই ব্যাকলিংক? এটা কেন ব্যবহার করতে হয়? এটার কীভাবে কাজ করে? আর এই ব্যাকলিংক আমরা কীভাবে তৈরি করতে পারি?

ব্যাকলিংক হচ্ছে একটি এক্সটারনাল লিংক (External Link) যা অন্য একটি ওয়েবসাইট থেকে আপনি আপনার সাইটে পেয়ে থাকেন। আরো সহজভাবে বললে, যখন অন্য কেউ তাদের ওয়েবসাইটের কোন এক কনটেন্টে আপনার সাইটের লিংক প্রকাশ করে, তখন তাকে ব্যাকলিংক বলে। একটা উদাহরণ দিচ্ছি।

মনে করুন আপনার একটি ওয়েব সাইট আছে এবং সেই সাইটের লিংকটি আপনি অন্য একটি সাইটে রাখলেন। অথবা অন্য কেউ আপনার সাইটের লিংকটি তার ওয়েবসাইটে ভিজিটরদের ভিজিট করার জন্য দিল। তাহলে যে সাইটে আপনার সাইটের লিংক অন্য প্রকাশ করা হলো, সেই সাইটে আপনি আপনার সাইটের জন্য একটি ব্যাকলিংক পাবেন।

আবার ধরুন, আপনার বন্ধু আপনাকে জিজ্ঞেস করলো সে কিভাবে ওয়েব ডিজাইন ডিজাইন শিখতে পারে? আপনি তাকে উত্তর দিলেন ওয়েব ডিজাইন শিখতে কোর্সটিকার এই লেখাটি পড়ো। তাহলে, সেটি হয়ে গেল একটি ব্যাকলিংক।

ব্যাকলিংক হচ্ছে নিজের সাইটের লিংক অন্য কোন সাইটে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাবমিট করা এবং সেই লিংকের মাধ্যমে ওই সাইটের ভিজিটরদের আপনার সাইটে নিয়ে আসা। এটা সরাসরি হতে পারে, পরোক্ষভাবে হতে পারে কিংবা উভয় পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতেও হতে পারে।

যেমন আপনি যদি কোন সাইটের নির্দিষ্ট একটি কনটেন্টে নিজের মতামত প্রকাশ করে তার সাথে আপনার সাইটের লিংকটিও সংযুক্ত করে দেন এবং ওই সাইটের এডমিন যদি কমেন্টটি এ্যাপ্রুভ করে, তাহলে আপনি একটি ব্যাকলিংক পেয়ে গেলেন। আবার আপনি সরাসরি কোন ওয়েবসাইটের এডমিনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, যেন তারা তাদের পরবর্তী কোন কনটেন্টে আপনার সাইটকে উল্লেখ করে।

কেন ব্যাকলিংক ব্যবহার করবো?

একটি সাইটের গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে ব্যাকলিংক বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল সার্চে শীর্ষে নিয়ে যেতে চান, তাহলে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ) করতে হবে। আর অফ পেজ এসইও এর ধাপগুলোর মধ্যে লিংক বিল্ডং বা ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একটি ব্যাকলিংক মানে, আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোর প্রতি একটি সমর্থন। আর ১০০ টি ব্যাকলিংক মানে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোর প্রতি ১০০ টি সমর্থন। অর্থাৎ আপনার সাইটের যত ব্যাকলিংক রয়েছে, কনটেন্টগুলোর গ্রহণযোগ্যতাও তত বেশি।

আমরা যে কোন তথ্য জানার জন্য গুগলে সার্চ করি। গুগল সার্চে ওই সকল ওয়েবসাইটগুলোই শীর্ষে অবস্থান করে যাদের ব্যাকলিংক বেশি। কারণ গুগল কখনোই চাইবে না, যে সাইটগুলোর জনসমর্থন নেই, সেই সাইটগুলো আপনার সামনে এনে দিক। আর এই গুগল সার্চ ইঞ্জিনের কাছে ব্যাকলিংক তৈরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সুতরাং যদি প্রতিনিয়ত আপনার সাইটের ব্যাকলিংক বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইটকে গুরুত্ব বেশী দেবে এবং র‍্যাংক প্রদান করবে।

ব্যাকলিংক কি ভিজিটর বাড়াতে সাহায্য করে?

অব্যশই। ব্যাকলিংক যেভাবে আপনার সাইটকে গুগল র‍্যাংক পেতে সাহায্য করে, ঠিক ভিজিটর বাড়াতেও সাহায্য করে। যখন কোন ওয়েবসাইটের কনটেন্ট বা পোস্টে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক করানো থাকে, তখন ওই ওয়েবসাইট থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসার সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

আমরা কীভাবে ব্যাকলিংক পেতে পারি?

কোন সাইটের কোন কনটেন্টে বা মন্তব্যে বা অন্য কোথাও যদি আপনার সাইটের লিংক দেয়া থাকে তাহলে সেটা আপনার সাইটের জন্য ব্যাকলিংক হিসেবে ধরে নেয়া হবে। যদিও এসইও'র ক্ষেত্রে এটি একটি পুরোনো পদ্ধতি। যা বর্তমানে এড়িয়ে চলতে বলা হয়ে থাকে। এমন অনেক ফোরাম আছে যেখানে কেউ তার মতামত ব্যক্ত করার সময়ে যদি আপনার সাইটের লিংক উল্লেখ করে তাহলে আপনি একটি ব্যাকলিংক পাবেন। আপনি আরো অনেক ভাবেই ব্যাকলিংক পেতে পারেন। যেমন:

  • কোন ব্লগসাইটে গেস্ট ব্লগার হিসেবে আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে
  • ফোরাম টিউনিং এর মাধ্যমে
  • কোন ব্লগে মন্তব্য করার মাধ্যমে
  • কোন ফোরামে মন্তব্যের করার মাধ্যমে

ব্যাকলিংক পাওয়ার এই পদ্ধতিগুলো সার্চ ইঞ্জিন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তবে এর বাইরেও আপনি অন্যান্য উপায়ে ব্যাকলিংক পেতে পারেন। যেমন কোন ওয়েবসাইটের সাথে লিংক এক্সচেঞ্জ। অর্থাৎ অন্য সাইট এডমিনের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে। বিভিন্ন সাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আপনি ব্যাকলিংক সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে ব্যাকলিংক কিনতেও পারেন।

যেকোন সাইট থেকে পাওয়া ব্যাকলিংক কি সমান গুরুত্বপূর্ণ?

একদমই না। আপনাকে ব্যাকলিংক দেবে, এরকম শতশত সাইট হয়তো আপনি পাবেন। কিন্তু গুগলে আপনার সাইট র‍্যাঙ্ক পাওয়ার জন্য সব ব্যাকলিংকই একই রকমের গুরুত্বপূর্ণ না। আপনাকে সব সময় ওই সকল সাইট থেকেই ব্যাকলিংক নেয়ার চেষ্টা করতে হবে, যাদের নিজেদের র‍্যাঙ্কিং ভালো।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিএলপি কর্নার নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url